ডিসেম্বর ৩১, ২০২১, ০৮:৩৩ পিএম
সৈকত পরিচ্ছন্নতার এক কার্যক্রমে অংশ নিয়ে স্বেচ্ছাসেবীরা চার ঘণ্টায় সেন্ট মার্টিনের একটি অংশ থেকে প্রায় দেড় হাজার কেজি ময়লা ও আবর্জনা পরিষ্কার করেছে, যেগুলোর বেশির ভাগই পচনশীল নয়। বছরজুড়ে বিপুল পরিমাণ জমা হওয়া বর্জ্য দেশের একমাত্র এ প্রবাল দ্বীপ থেকে মূল ভূখণ্ডে ফিরিয়ে নিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বানও এসেছে এ অভিযান থেকে।
প্রতিবছরই বাড়ছে বর্জ্যের পরিমান
শুক্রবার বছরের শেষ দিন সেন্ট মার্টিনে ‘পিক ইট আপ, ক্লিন ইট আপ, সি চেঞ্জ’ স্লোগানে এ কার্যক্রমের আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপ এর বাংলাদেশ অংশ। এবারের সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অভিযানে প্রায় এক হাজার ৪৫০ কেজি প্লাস্টিক এবং অপচনশীল আবর্জনা সাফ করা হয়েছে।
এক দিন সেন্ট মার্টিনের ক্ষুদ্র অংশে পরিচালিত পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ২০১১ সালে পরিষ্কার করা হয় ৪৮০ কেজি অপচনশীল দ্রব্য; যা প্রতিবছরই বেড়ে ২০১৬ সালে হাজার কেজি ছাড়ায়। ২০২০ সালে এর পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ১৪০ কেজি।
আয়োজকরা জানান, প্রতি বছরই বাড়ছে এসব বর্জ্যের পরিমাণ, যা দেশের একমাত্র এ প্রবাল দ্বীপের পরিবেশের জন্য মারাত্বক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্লাস্টিক দ্রব্যের এ ক্রমবর্র্ধমান আগ্রাসনের জন্য দ্বীপে আসা বিপুল পর্যটকদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণকে দায়ী করেন আয়োজক সংগঠন ওশান কনজারভেন্সি বাংলাদেশ অংশের সমন্বয়ক মুনতাসির মামুন।
বার্ষিক এ সৈকত পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেন প্রায় ৫০০ স্বেচ্ছাসেবী। এর মাঝে ঢাকা থেকে আসেন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার ৭৩ জন স্বেচ্ছাসেবী।
সেন্ট মার্টিন থেকে ১৩শ কেজি আবর্জনা ধ্বংস
পর্যটকদের অসচেতনতা থেকেও বর্জ্য বাড়ছে এমন কথাও বলছেন এ অভিযানে অংশগ্রহণকারীরা। তারা বলেন, এ ছোট জায়গার মনুষ্য সৃষ্ট আবর্জনা ধারণ করার ক্ষমতা আসলেই নেই। প্রবাল দ্বীপে বেড়াতে আসা পর্যটকদের এ নিয়ে সচেতন করার কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। তারাও পর্যটকদের আচরণ নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাওয়ার কথা জানালেন।
পর্যটকদের জন্য আইন প্রয়োগ
ট্যুরিস্ট পুলিশ সেন্টমার্টিন সাবজোনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহসীন বলেন, পর্যটকবাহী জাহাজ জেটিতে ভেড়ার পরপরই হ্যান্ডমাইকে পরিবেশ সচেতনতামূলক বার্তা দেয়া হয়। এছাড়া সৈকতের ব্যবসায়ী, হোটেল মালিকদের প্রতি নির্দেশনা আছে যাতে প্লাস্টিক দ্রব্য সৈকতে ফেলা না হয়। এরপরও পরিস্থিতির খুব উন্নতি হয়েছে বলা যাবে না।” পরিস্থিতিতে অসচেতন পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের উপর ‘আইন প্রয়োগ’ করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানালেন তিনি।
ওশান কনজারভেন্সির উদ্যোগে বিশ্বজুড়ে ৩৬তম ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপের অংশ হিসেবে এ অভিযান পরিচালিত হয়। বাংলাদেশে যা ২০০৫ সাল থেকে করা হচ্ছে। এ আয়োজনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান কোকা-কোলা।