দোকানদার নেই, তবুও কেনা যাবে পণ্য

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ২৫, ২০২১, ০৩:১৬ এএম

দোকানদার নেই, তবুও কেনা যাবে পণ্য

‘দোকানে’ নেই কোন বিক্রেতা। চাওয়া লাগছে না কারো কাছে কোন কিছু। একটি বাক্সের ভেতরে থরে থরে সাজানো আছে কোক, পেপসি, ড্রিংকিং ওয়াটারসহ বিভিন্ন খাবার। সেখানে পছন্দের পণ্যটি কিনতে লাগবে না কারও সাহায্য! ক্যাশ টাকা বা বিকাশ, নগদ ও ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করে নেওয়া যাবে  পণ্য। মূল্য পরিশোধ করার সাথে সাথেই বক্স থেকে বেরিয়ে আসবে কাঙ্খিত পণ্য। দেশে এমনই একটি ভেন্ডিং মেশিন চালু করেছে একটি কোম্পানি।  

বিদেশে এই ভেন্ডিং মেশিন বহু আগে থেকেই প্রচলিত। বিভিন্ন সিনেমা ও নাটকে এই মেশিন থেকে অভিনেতাদের পণ্য কিনতে দেখা যায় হরহামেশাই। ১৮৮০ সালে লন্ডনে এটি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। এরপর এটি পশ্চিমা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। 

২০২১ সালে এসে দেশের মানুষ নতুন করে পরিচিত হচ্ছে অত্যাধুনিক এই মেশিনের সাথে। এর আগেও এ মেশিনটি বাংলাদেশে ছিলো। তবে তা হাতে গোনা ৪ থেকে ৫টা। প্রচারও সেভাবে হয়নি তখন। এবার সেন্ককিপার নামের একটি কোম্পানি এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন করে নিয়ে আসে এ মেশিনটি। 

প্রায় ৯ মাসে তারা ৬১টি জায়গায় এ মেশিনটি স্থাপন করেছে। তার মধ্যে ৩৪টিই বিভিন্ন হাসপাতালে স্থাপন করা হয়েছে। ৫০০টি মেশিন স্থাপন করার চিন্তা ছিল কোম্পানিটির। তবে এ বছরের মধ্যে ২০০ মেশিন স্থাপন করা হবে বলে জানালেন সেন্ককিপার এর ব্যবসায়িক প্রধান মো. মিলজার রহমান। 

মিলজার দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, ’ভেন্ডিং মেশিন কনসেপ্ট কিন্তু প্রথম না। দেশের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় আমরা এটি প্রচুর পরিমাণে দেখতে পাই। এছাড়া জাপানে জনসংখ্যা থেকে ভেন্ডিং মেশিনের সংখ্যা বেশি। আমাদের দেশেও হাতেগোনা ৪-৫টা ছিলো। তবে সেগুলো সকলের ব্যবহার যোগ্য ছিলো না। সেই জায়গা থেকেই আমাদের এটা নিয়ে ভাবনা এবং কাজ শুরু করা। আমরা যখন এটা নিয়ে কাজ শুরু করলাম তখন দেশে করোনার প্রভাব প্রকট আকার নেয়। 

মেশিনটির প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মেশিনের পার্সগুলো বাইরে থেকে কিনে আনি। তারপর আমাদের নিজস্ব গোডাউনে এগুলো প্রস্তুত করা হয়। আমরা পুরো নিজস্ব অর্থায়নে কাজটি চালাচ্ছি। অন্য কারো সহযোগিতা নেওয়ার ইচ্ছা আপাতত নেই’। প্রতিটি মেশিনে ৫ লাখ টাকার মতো করে খরচ পড়ছে।

ভেন্ডিং মেশিন যেহেতু দেশে নতুন, তাই এর গ্রাহকদের মধ্যেও রয়েছে ব্যাপক উৎসাহ। এ ছাড়া ২৪ ঘন্টা খোলা থাকার কারণে গ্রাহকরাও ঝুকছেন এই মেশিন থেকে পণ্য কিনতে। ভেন্ডিং মেশিন ব্যবহারকারী এক গ্রাহক নাজিম উদ্দিন যেমনটা দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বললেন, ‘এই মেশিন আসার পরে সবার জন্য ভালো হয়েছে। এটি ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে। যখন যা দরকার সেটিই আমরা কিনে নিতে পারি। ক্রেতাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে এগুলো আরো বেশি করে স্থাপন করা দরকার’। 

একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা বললেন ব্যাংক ব্যবসায়ী ইসরাত জাহান। তিনি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, এখানে আমি যা চাই তা চয়েজ করে কিনতে পারছি। কোন ধরনের ঝুট ঝামেলায় আমাদের পরতে হচ্ছে না। পকেটে টাকা না থাকলেও আমরা বিকাশ বা নগদ ইউজ করে প্রোডাক্ট ক্রয় করতে পারছি। এটি খুবই ভালো উদ্দ্যেগ। 

সেন্ককিপার এর কর্মকর্তারা জানালেন, ‘আমরা প্রচুর মানুষের সাড়া পাচ্ছি। যেহেতু এটি একটি নতুন আইডিয়া, তাই মানুষের আগ্রহও এর দিকে সবচেয়ে বেশি। আবার অনেকের এটি খুবই প্রয়োজনও। বিশেষ করে হাসপাতালগুলোতে এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। কারণ বেশি রাত হয়ে গেলে হাসপাতালে কিছু (পণ্য) পাওয়া যায় না। আপনার কিছু প্রয়োজন হলে বাইরে দূরে গিয়ে কিনতে হবে। ফলে হাসপাতালে যখন ক্রেতা সহজে কিছু কিনতে পারছে তখন তার কেনার আগ্রহও বাড়বে। এ সকল জায়গা থেকেই আমরা ভালো পরিমাণ সাড়া পাচ্ছি’।

Link copied!