গতবারের মতো এ বছরও ভুল এবং তথ্যের অসঙ্গতিসহ নতুন পাঠ্যবই তুলে দেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের হাতে। বেশিরভাগ পাঠ্যবইয়েই হাইফেন, ড্যাশ ও কোলনের ব্যবহার যথাযথ হয়নি। এ ছাড়াও অন্যান্য বইয়ে নানা ধরনের ভুল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, যা গত বছরের বইতেও দেখা গেছে। এনসিটিবি জানিয়েছে, এ বিষয়ে কমিটি গঠন করে ভুলগুলো চিহ্নিত করার পর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংশোধনী পাঠানো হবে।
নতুন পাঠ্যবই পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নবম-দশম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইয়ের ১৬ নম্বর পৃষ্ঠায় লেখা রয়েছে, ‘পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ ক্যাম্প, পিলখানা ইপিআর ক্যাম্প ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আক্রমণ চালায় ও নৃশংসভাবে গণহত্যা ঘটায়।’ প্রকৃতপক্ষে রাজারবাগে ছিল পুলিশ লাইনস, আর পিলখানায় ছিল ইপিআর সদর দপ্তর।
আর ‘বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা’ বইয়ের ২০০ নম্বর পৃষ্ঠায় লেখা রয়েছে, ‘১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের নিকট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।’ এ তথ্যটিও সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুকে শপথ পড়িয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী।
এ ছাড়া বইয়ের ১৮১ পৃষ্ঠায় ‘অবরুদ্ধ বাংলাদেশ ও গণহত্যা’ অনুচ্ছেদে লেখা রয়েছে, ‘২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশজুড়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী নির্যাতন, গণহত্যা আর ধ্বংসলীলায় মেতে ওঠে।’ প্রকৃত তথ্য হলো গণহত্যা ও ধ্বংসলীলা শুরু হয় ২৫ মার্চ কালরাতে।
‘পৌরনীতি ও নাগরিকতা’ বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে (পৃষ্ঠা-১) ‘অংশগ্রহণের’ বদলে ‘অংশগ্রহনের’ ছাপা হয়েছে। ‘ছিল না’র বদলে ছাপা হয়েছে ‘ছিলনা’।
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, পাঠ্যবইয়ের ভুল সংশোধনে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। সব ভুল চিহ্নিত করে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে একটি সংশোধনী করে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে। ক্লাসে পড়ানোর সময় সংশোধনী দেখে পড়াতে শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, পাঠ্যবইয়ে ভুলের বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছি। ভুলগুলো চিহ্নিত করার পর তা সংশোধন করে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও অবহিত করা হবে।