স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে বঁটি নিয়ে এক ছাত্রীকে ধাওয়া করলেন ইডেন ছাত্রলীগ নেত্রী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩, ১১:০৬ এএম

স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে বঁটি নিয়ে এক ছাত্রীকে ধাওয়া করলেন ইডেন ছাত্রলীগ নেত্রী

এক ছাত্রীকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে তারপর তাঁর চুল ছিঁড়ে পরে বঁটি নিয়ে ধাওয়া করেছেন ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি নেত্রী নুজহাত ফারিয়া রোকসানা। কারণ, ওই ছাত্রী তার খারাপ আচরণের প্রতিবাদ করেছিল।

মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ইডেন কলেজের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা হলের ৫০৬ নম্বর রুমে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষে পড়েন। তিনি এখন হলের বাইরে আছেন। তিনি জানান, তিনি রোকসানাকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে হলে উঠেছেন। কিন্তু এক বছর হয়ে গেলেও এখনও সিট দেননি।

ওই শিক্ষার্থী জানান, ‘তার (রোকসানা) রুমে ক্রিকেট স্টাম্প আছে। কথা না শুনলে তিনি স্টাম্প দিয়ে মারধর করেন। তিনি সবার সঙ্গেই বাজে আচরণ করেন। আমি তার এই খারাপ আচরণের প্রতিবাদ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার রুমে এসে আমাকে স্টাম্প দিয়ে মারেন। এরপর তিনি বঁটি নিয়ে আমাকে মারতে এলে আমি চিৎকার করে রুম থেকে বের হয়ে যাই। পরে অন্যরা এগিয়ে এসে আমাকে বাঁচান।’ 

পরে শিক্ষকরা এসে তাঁকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে ‘স্বেচ্ছায় হল ত্যাগ’ করছি লিখে আবেদন দিতে বলেন।

এই ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীরা ভুক্তভোগীর অভিযোগ সমর্থন করে হল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাঁরা অভিযোগে জানান, রোকসানা ওই মেয়ের চুল ছিঁড়ে ফেলেন। নির্যাতনে ভুক্তভোগীর জামা ছিঁড়ে যায়। প্রতিবাদ করায় পরে পুরো ফ্লোরের ছাত্রীদের সিট কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন রোকসানা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ‘রোকসানা হলে সিট বাণিজ্য করেন। তিনি বাইরের মেয়েদের টাকার বিনিময়ে হলে রাখেন। তিনি এক রুমে ২০ জন করে মেয়ে রাখেন। তিনি টাকা নিয়ে আমাদের হলে তুললেও এখন পর্যন্ত সিট দেননি। বরং আমাদের দিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত কাজ করান। তাঁর জুতা পর্যন্ত পরিষ্কার করান। তাঁর কাজ করতে রাজি না হলে তিনি ছাত্রীদের বাজে ভাষায় গালিগালাজ করেন।’

এদিকে, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে অভিযোগ অস্বীকার করেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার 'ডান হাত' বলে পরিচিত অভিযুক্ত ইডেনের ছাত্রলীগের সহসভাপতি রোকসানা। 

উল্লেখ্য, তার বিরুদ্ধে এর আগেও কলেজের আরেক নেত্রীকে মারধর, সিট দখল ও শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। গণমাধ্যমেও প্রচারিত হয়েছিল সে সংবাদ।

এ প্রসঙ্গে হল সুপার নাজমুন নাহার বলেন, ‘এটা তাদের দুইজনের (রোকসানা এবং ভুক্তভোগী) অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমি তাদের বলেছি তারা যেন মিটমাট করে নেয়।’ 

এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এ সংগঠনের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থেকে কেউ এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটালে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Link copied!