দুটি ইউনিটের প্রস্তাবনা

রাস্তায় মাদক পরীক্ষা করবে মাদক অধিদপ্তর

আহম্মেদ মুন্নী

জুন ৩, ২০২৩, ০১:৫০ এএম

রাস্তায় মাদক পরীক্ষা করবে মাদক অধিদপ্তর

ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

রাস্তায় তাৎক্ষণিক কোনো ঘটনা হলে সেখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কোনো ধরনের মাদকের সাথে সম্পৃক্ত কি না সেটা জানা সম্ভব হচ্ছে না। আর এই তাৎক্ষণিক মাদক পরীক্ষার জন্য নতুন একটি ইউনিট গঠন করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তবে শুধু তাৎক্ষণিক মাদক পরীক্ষা নয় মানিস্ক্যামার ইউনিট করতে যাচ্ছে তারা। নতুন এই উইং সংক্রান্ত প্রস্তাবনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো হয়েছে।

মাদকের নতুন দুই ইউনিট

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আসছে নতুন দুটি ইউনিট। একটি হলো মানিস্ক্যাম ইউনিট। সম্প্রতি দেশে বিভিন্ন অনলাইন থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন হচ্ছে। এছাড়া ডার্ক ওয়েব থেকেও মাদকের লেনদেনের খবর শোনা যায়। আর তথ্যপ্রযুক্তিগত প্রতিবন্ধকতার কারণে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এদের শনাক্ত করতে পারেনি। যে কারণে নতুন এই ইউনিটগুলোতে মাদকের জন্য লেনদেনের যে বিভিন্ন আর্থিক মাধ্যম রয়েছে সেগুলো শনাক্ত করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।

দ্বিতীয় ইউনিট হচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির ফরেনসিক ল্যাব। রাস্তায় বিভিন্ন সময়ে মাদকের সন্দেহভাজন আটক করা হয়। কিন্তু তাৎক্ষণিক কোনো ধরনের পরীক্ষণ পদ্ধতি না থাকায় অনেক সময় সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আনা যায় না। এদিকে অনলাইনে অনেকেই মাদকগ্রহণের কথা বলে থাকে। তাই তাদের দ্রুত শনাক্তের জন্য এই ল্যাবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সরঞ্জাম আনা হবে। ব্রিথিং এনালাইজার মেশিনসহ বেশি কিছু সরঞ্জাম আসবে এই ইউনিটের আওতায়। যার ফলে এলএসডির মতো সাইলেন্স হ্যালুসিনেশন ড্রাগও শনাক্ত করা যাবে এই ব্রিথিং এনালাইজারে।

এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপরিচালক মানজারুল ইসলাম বলেন, দেশে এখন বিদেশি অনেকরকম মাদক পাওয়া যাচ্ছে, এলএসডি, ক্রিস্টাল মেথ বা আইস, কুশ, ডিওবি, আমেরিকান ক্যানাবিজ, সিনথেটিক গাজাসহ যে মাদক বাংলাদেশে বারবার ধরা পড়ছে সেগুলোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত বিষয়াদি নেই এজন্য এগুলো নিয়ে কাজ করতে আমাদের দুটো নতুন উইং খুব শীঘ্রই চালু করা হবে। এক্ষেত্রে আমাদের দক্ষ লোকজনকে সেখানে নিয়োগ দেয়া হবে।

প্রতি ইউনিটে থাকবে ২০ জন

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই দুই ইউনিটে ২০ জন করে সদস্য থাকবে। তারা পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন স্পটে নিয়োজিত থাকবে। এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও পরীক্ষার জন্য সারাদেশে ২২টি ল্যাব প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ৪টি ল্যাব থাকলেও তা যথেষ্ট নয়। এদিকে ল্যাবের সরঞ্জামও বৃদ্ধির প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মানজারুল ইসলাম বলেন, লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইথ্যালামাইড বা বায়েমেথিল ট্রাইপ্টেমিন বা ডিএমটি নামক ভয়ঙ্কর এক মাদক সম্পর্কে ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি। এসব নতুন মাদক নিয়ে কাজ করতে গেলে আমাদেরও এসব সম্পর্কে আরও নিখুঁত জানতেই আসলে আমাদের নতুন উইংয়ের যাত্রা শুরু করা।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের হিসাবে দেশে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩৬ লাখ এবং সবচেয়ে বেশি মাদক ব্যবহারকারী আছে ঢাকা বিভাগে। যদিও বেসরকারি হিসাবে, মাদক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭০ লাখের কাছাকাছি বলে দাবি করে বিভিন্ন সংস্থা। এখনই যদি বাংলাদেশে মাদকের বিস্তার রোধ করা না যায় তবে অচিরেই বাংলাদেশের তরুণ সমাজ অন্ধকারে ডুবে যাবে।

Link copied!