গণভোটের সিদ্ধান্ত সরকারকেই নিতে হবে: বদিউল আলম মজুমদার

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ১১, ২০২৫, ০২:২২ পিএম

গণভোটের সিদ্ধান্ত সরকারকেই নিতে হবে: বদিউল আলম মজুমদার

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হলেও গণভোট আয়োজনের সুযোগ রয়েছে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সরকারকেই নিতে হবে, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই সেই সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত।

শনিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) মিলনায়তনে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হলেই গণতন্ত্র সুরক্ষিত হবে শীর্ষক ছায়া সংসদে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “আমরা আশা করছি রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে। গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একই দিনে হবে কিনা, সে বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারকে সুপারিশ দেবে। তবে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই।

তিনি আরও বলেন, “গণভোট যেন জনগণের সম্মতি পায়, সেই লক্ষ্যে সব শক্তি নিয়োগ করতে হবে। শেখ হাসিনা সরকার একটি স্বৈরাচারী কাঠামো রেখে গেছে, যা জুলাই সনদের মাধ্যমে সংস্কার করা দরকার।

সুজন সম্পাদক সতর্ক করে বলেন, “জুলাই সনদ স্বাক্ষরের পর পরবর্তী সরকার যদি তা বাস্তবায়ন না করে, তাহলে তাদের পরিণতিও শেখ হাসিনার সরকারের মতো হবে। ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও যেন দুর্নীতির পালাবদল না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। গণতন্ত্র রক্ষায় সুষ্ঠু নির্বাচন যেমন জরুরি, তেমনি নির্বাচিত সরকারের দায়িত্ব হবে আইনের শাসন ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা।

তিনি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন। তাঁর ভাষায়, “নির্বাচন ও রাজনৈতিক দল থেকে দুর্বৃত্তায়ন দূর করতে হবে। স্বাধীন ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে এবং নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।”

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, “শঙ্কা কাটিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে। জুলাই সনদ নিয়ে ঐকমত্যের বিষয় এখন সিলভার লাইন থেকে গোল্ডেন লাইনে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রকামী সব রাজনৈতিক দলই একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রত্যাশায় আছে, দেশের মানুষও অপেক্ষায় আছে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার।

তিনি আরও বলেন, “আগামী ১৫ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জুলাই সনদ স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর রেষারেষিতে যদি এ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়, তাহলে দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা মারাত্মক সংকটে পড়বে। এতে ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসানের পর অর্জিত গণতন্ত্র, শহীদদের রক্ত ও ন্যায়বিচারের দাবিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ছায়া সংসদ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় তেজগাঁও কলেজ ও প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির বিতার্কিক দল। বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সিনিয়র সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক মো. হুমায়ূন কবীর ও সাংবাদিক জাকির হোসেন লিটন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর হাতে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেওয়া হয়।

Link copied!