ডিসেম্বর ৫, ২০২৪, ১১:৪৩ পিএম
ছাত্র ও জনতার তোপ সামলাতে না পেরে ঢাকা ছেড়েছিলেন শেখ হাসিনা। ৫ আগস্টের পর ধারণা ছিল শেখ হাসিনা আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। এই ধারণা পাল্টে যাচ্ছে। বিবিসি বাংলা এমন কিছুরই ইঙ্গিত পেয়ে গেছে বলে দাবি করেছে।
গত সপ্তাহে শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন এবং আগামী ৮ ডিসেম্বর তিনি লন্ডনে আরও একটি অনুষ্ঠানে টেলিফোনের মাধ্যমে অংশ নেবেন ।
বিবিসি বাংলাকে এ ব্যাপারটি নিশ্চিত করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী। অবশ্য এর আগে ইউরোপের দুটি দেশে একইভাবে বক্তব্য দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তার এমন চেষ্টা দেখে মনে হচ্ছে, রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।
বিএনপিও শেখ হাসিনার এই চেষ্টাকে টিকে থাকার লড়াই হিসেবেই ধরে নিয়েছে। শেখ হাসিনার বেশ কিছু ফোন কল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিলো। যদিও সেসব সত্যিই তার কথোপকথন কি না, তা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। বিশেষ প্রযুক্তি এআই হতে পারে অনেকের ধারণা।
তবে সেই রেকর্ডগুলোতে তার দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে নানা ধরনের রাজনৈতিক নির্দেশনা দিতে শোনা গেছে তাকে। কিন্তু ওইসব ফাঁস হওয়া কল রেকর্ডগুলোকে বাদ দিলে শেখ হাসিনা এবারই জনসম্মুখে বক্তব্য দিতে দেখা যাচ্ছে। আবার কলকাতার কিছু পত্রিকা শেখ হাসিনার বক্তব্যকে সামনে এনে খবর প্রকাশ করছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে বর্তমানে যেধরনের টানাপোড়েনমূলক সম্পর্ক চলছে, এর মাঝে হঠাৎ করে শেখ হাসিনার সরাসরি বক্তব্য দেওয়ার বিষয়টিতে অনেকেই মনে করছেন যে শেখ হাসিনা কিংবা আওয়ামী লীগ বিরতি ভেঙ্গে ফের রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছে।
যদিও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী বলেছেন, “আওয়ামী লীগ বরাবরই রাজনীতিতে আছে। তার নতুন করে ফিরে আসার তো কিছু নাই।”
নিউ ইয়র্কে শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে যেসব দাবি করেছেন, সেসবের অন্যতম ছিল– বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন চলছে, এবং তিনি ও তার বোন শেখ রেহানাকে খুন করার চক্রান্ত করা হয়েছিলো ইত্যাদি।
“শেখ হাসিনা যা যা বলছেন, তা দেশের স্বার্থে বলছেন” উল্লেখ করে মি. চৌধুরী আরও বলেন, “দেশ এখন দুর্বৃত্তদের হাতে চলে গেছে। দেশকে, দেশের মানুষকে, দেশের সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করা আওয়ামী লীগের নৈতিক দায়িত্ব। কারণ আওয়ামী লীগ এই দেশের সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত।”
এদিকে গত বৃহস্পতিবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার “বিদ্বেষমূলক বক্তব্য” গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সব ধরনের বক্তব্য-বিবৃতি গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিলো। যদিও চলতি বছরের অগাস্টে সেই আদেশ প্রত্যাহার করেছে হাইকোর্ট।
যদিও শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের বিষয়ে আদেশের সমালোচনা করে মি. চৌধুরী বলেছেন, এটি “বাক স্বাধীনতা হরণ”।
তিনি বলেন, জন্মলগ্ন থেকেই আ’লীগ এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করে আসছে।