গত ১৫ জুলাই থেকে আট আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনে অংশ নেয়াদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা, গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হবে না বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজে এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাথে মিশে যাওয়া পেশাদার অপরাধী ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদেরকেও যে কোনো ধরনের অপরাধের জন্য মামলা, গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা যাবে না বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
‘এর মানে হলো, যারা হাজার হাজার পুলিশ হত্যা করেছে, হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের হত্যা করেছে, হাজার হাজার মানুষকে পিটিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে আহত করেছে, অনেককে আজীবনের জন্যে পঙ্গু করেছে, লক্ষ কোটি টাকার জনগণের সম্পদের ক্ষতি করেছে তাদের কে সকল অপকর্মের জন্যে দায়মুক্তি দিয়ে দেয়া হয়েছে, ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছে!,’ উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
‘এ যেনো ৭৫ এর ১৫ আগস্ট পরবর্তী সকল ঘটনার পুনরাবৃত্তি,’ মন্তব্য করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে স্বপরিবারে হত্যার পর খুনিদের ইনডেমনিটি যেমন দিয়েছিল খন্দকার মোশতাক, ঠিক তেমনি ২০২৪ সালের হত্যা, খুন, অগ্নিসংযোগ এর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জোরপূর্বক দেশত্যাগ করিয়ে হাজার হাজার মানুষকে হত্যার পর অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখল করে ড. ইউনুস ও তার পরিষদ হত্যাকারী ও দেশের সম্পদ ধ্বংসকারী,চক্রান্তকারীদের দায়মুক্তি দিয়ে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে চাচ্ছে।
১৫ জুলাই থেকে সব হত্যাকাণ্ড, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজের তদন্তের জন্যে তিন সদস্য বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ড.ইউনুস জুডিশিয়াল কমিটির তদন্ত স্থগিত করে দেয়। এর কারণ সহজে অনুমেয় যে ইউনুস চান না জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত যতো ধরনের অপরাধ হয়েছে তার বিচার হোক, এর সাথে যারা সম্পৃক্ত তাদের চিহ্নিত করা হোক এবং এদের দোষী প্রমাণিত করে শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ড. ইউনুস যুক্তরাষ্ট্র সফরে বিশ্ব মিডিয়ায় বলেছেন জুলাইয়ের আন্দোলন ছিলো একটি সূক্ষ্ম পরিকল্পনা এবং মাস্টার মাইন্ডের মাধ্যমে তা পরিচালিত হয়। এর মানে হলো আন্দোলনের সময় যতো হত্যা হয়েছে তা প্রি প্লানিংয়ের মাধ্যমেই হয়েছে। যারা এই কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছে এবং পাঁচই আগস্ট থেকে হাজার হাজার মানুষকে, পুলিশকে হত্যা করেছে, তারা চিহ্নিত হোক ও বিচারের মুখোমুখি হোক, তা ইউনুস চান না। হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দেয়ার মাধ্যমে বিনা তদন্তে ও বিনা বিচারে ক্ষমা করে দিয়েছেন। একইসাথে তিনি ও তার সহযোগীরাও এসব হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার সাথে জড়িত, তাই প্রমাণিত হয়।
আরও পড়ুন: মিথ্যা মামলাকারীদের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হুঁশিয়ারি
পঁচাত্তরে ১৫ই আগস্টের খুনিদের ইনডেমনিটি দিয়েও রক্ষা করতে পারেনি খন্দকার মোশতাক- এ মন্তব্য করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জনগণ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে মহান জাতীয় সংসদে ইনডেমনিটি বাতিল করে জাতির পিতা হত্যাকারীদের বিচার করেছে। ইনশাআল্লাহ খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না। আবারো বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনগণ এই দেশে গণতন্ত্র পুনঃ:প্রতিষ্ঠা করে ইউনুসের ইনডেমনিটি বাতিল করে সকল হত্যাকারী, লুণ্ঠনকারী অগ্নিসংযোগকারী ও দেশের সম্পদ বিনষ্টকারীদের বিচার এই বাংলাদেশের মাটিতেই করবে। ইনশাআল্লাহ্।