সময়টা আশির দশক। কলকাতা জুড়ে বাম-কংগ্রেসের তুমুল অরাজকতা। সেই হিংসা গড়িয়েছিল কলকাতা সংলগ্ন হাওড়া, শিবপুরেও। সেখানে প্রতিদিনের ত্রাস রাজনৈতিক হত্যা। ফি-দিন চার-পাঁচ জন নিরীহ মানুষ খুন হতেন। সন্ধের পরে তাই চট করে বাইরে পা রাখার সাহস দেখাতেন না কেউ। অবস্থা ক্রমশ যখন আয়ত্তের বাইরে তখনই রাশ টেনেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। তাঁর যোগ্য সহকারী আইপিএস অফিসার সুলতান সিংহ। তাঁদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলেন আরও এক জন। তিনি নারী। রাজনৈতিক সন্ত্রাসের বলি তাঁর পরিবার।
কতটা ভয়ঙ্কর ছিল সেই দিনগুলো। কী ভাবে হাতে প্রাণ নিয়ে প্রতিদিন বাঁচতেন স্থানীয় মানুষেরা?
বাম-কংগ্রেসের সেই সন্ত্রাস এ বার উঠে আসছে বড় পর্দায়। ছবির নাম ‘শিবপুর’।
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছবির পরিচালক-প্রযোজক অরিন্দম ভট্টাচার্যের আগামী ছবি। রাজনৈতিক থ্রিলার দেখানোর পাশাপাশি তিনি আরও একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন। বহু বছর পরে তাঁর ছবিতে ফের এক সঙ্গে ক্যামেরাবন্দি হতে চলেছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়-স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।
পরিচালক জানিয়েছেন, একটা সময় যাঁদের নাম টলিউডে একসঙ্গে উচ্চারিত হত। পরে নানা কারণে তাঁরা আর পর্দা ভাগ করেননি। এঁরা ছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ থাকবেন মমতাশঙ্কর, রজতাভ দত্ত, খরাজ মুখোপাধ্যায়। পরিচালকের ভাবনায় জ্যোতি বসু শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। যদিও তাঁর সঙ্গে এখনও পাকা কথা হয়নি। এ ছাড়াও, এক নবাগতাকেও তাঁর ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় আনতে চলেছেন অরিন্দম। ছবিটির প্রযোজনা করবেন সন্দীপ সরকার এবং অজন্তা সিংহ রায়। একটি বিশেষ চরিত্রের জন্য সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়কেও নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
পরমব্রত-স্বস্তিকা কি জুটি হিসেবে এই ছবিতে অভিনয় করতে চলেছেন? পরিচালকের কথায়, ‘‘ছবিটিতে প্রেমের কোনও জায়গাই নেই। পরমব্রত অভিনয় করবেন সুলতান সিংহের ভূমিকায়। স্বস্তিকা সেই রমণী, যাঁর পরিবার সন্ত্রাসের বলি।’’
শিবপুর সংলগ্ন এলাকা এবং নবান্ন থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে দিন-রাত শ্যুট চলবে। শ্যুটিং শুরু হবে ৮ জুলাই। ৪ এবং ৫ জুলাই অভিনেতাদের লুক সেট হবে। সম্ভবত প্রস্থেটিক রূপটানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। চরিত্র অনুযায়ী পরমব্রতকে পুলিশি পোশাকের পাশাপাশি দেখা যাবে সাদা পোশাকেও। এই প্রথম স্বস্তিকা অভিনয় করবেন একেবারে রূপটান ছাড়াই, ডি-গ্ল্যাম লুকে!