ছেলেটির নাম কামরুল। জীবিকার টানে ২১ বছর বয়সে সে যায় মধ্যপ্রাচ্যে। উদয়াস্ত পরিশ্রম করে পরিবারের জন্য টাকা পাঠায়। বোনের বিয়ে দেয়। ভালোই চলছিল দিনগুলো। তারপর এক দুপুরে আসে ভয়ানক দুঃসংবাদ। খনি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে কামরুলের। শোকে কামরুলের শয্যাশায়ী বাবাও শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয় ভাইবোনেরা। কয়েক মাস পরে জানা যায়, কামরুল বেঁচে আছেন। দেশেও ফিরে আসে সে। আবারও সুখ ফেরে সংসারে। তবে কামরুলের প্রেমিকার অন্যত্র বিয়ে হওয়ার উপক্রম হলে তৈরি হয় জটিলতা। কামরুল নিজের ব্যবসা শুরুর জন্য ভাইদের কাছে পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ চায়। তখন বেঁকে বসে ভাইয়েরা। কপর্দকশূন্য হয়ে অসহায় কামরুল ঘুরতে থাকে দ্বারে দ্বারে। এমন ঘটনা নিয়ে তৈরি হয়েছে ঈদের নাটক ‘আপনজন’। বানিয়েছেন মুরসালিন শুভ।
এবার ঈদে প্রচারিত হাতে গোনা যে ক’টি নাটক আলোচিত হয়েছে, ‘আপনজন’ তার মধ্যে অন্যতম। কামরুল চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা পাচ্ছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। অপূর্বকে দর্শক চেনেন মূলত রোমান্টিক হিরো হিসেবে। বছরজুড়ে প্রধানত শহুরে গল্পেই তাঁর দেখা মেলে। গত কয়েক বছরে কমেডি ঘরানার গল্প নিয়েও এক্সপেরিমেন্ট করছেন। ইউটিউবে তাঁর এসব নাটকের দর্শক অনেক। তবে অপূর্ব যখনই তাঁর চেনা ঘরানা পেরিয়ে পা রেখেছেন মধ্যবিত্তের গল্পে, পেয়েছেন অভাবনীয় সাফল্য। সেটা ‘বড় ছেলে’র বেলায় যেমন সত্যি, একইভাবে প্রাসঙ্গিক ‘একটি নির্জন দুপুর চাই’-এর ক্ষেত্রেও। এসব নাটকে মধ্যবিত্ত সমাজের প্রতিনিধি তিনি। বেকার যুবক, প্রবাসী শ্রমিক কিংবা গ্রামের সাধারণ যুবক—এমন চরিত্রগুলোতে দর্শকদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছেন অপূর্ব।
অপূর্ব বলছেন, ‘আমি সব সময় চেষ্টা করি কীভাবে আরেকটু ভালো করা যায়। ভিন্ন ধরনের গল্প খুঁজি। যে গল্পগুলো বাস্তবতার কাছাকাছি, সাধারণ মানুষের কথা বলে। ‘‘আপনজন’’ কিংবা ‘‘নায়ক’’ মানুষের ভালো লেগেছে, কারণ তাঁরা এসব গল্পে নিজেদের খুঁজে পেয়েছেন। ভবিষ্যতেও এ ধরনের কাজে যুক্ত থাকার চেষ্টা থাকবে আমার।’