মার্চ ১, ২০২৩, ০৭:৪৭ পিএম
নির্বাচন, সক্রিয় সহিংসতা, পরীক্ষাসহ নানা কারণে ২০২২ সালে বিশ্বের ৩৫টি দেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। কিছু দেশে একাধিকবারও এ ঘটনা ঘটে। তবে সবচেয়ে বেশিবার সরকারি নির্দেশে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধের ঘটনা ঘটেছে ভারতে। টানা ৫ বছর ধরে দেশটি এই ক্ষেত্রে বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে আছে। বাংলাদেশ আছে এ তালিকার পঞ্চম স্থানে।
২০১৬ সাল থেকে ডিজিটাল অধিকার গোষ্ঠী অ্যাকসেস নাউ এবং #কিপইটঅন ক্যাম্পেইন ইন্টারনেট সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। দেশের সংখ্যা বিবেচনায় ২০২২ সালেই সবচেয়ে বেশি দেশে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের ঘটনা ঘটেছে। ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে ৩৫টি দেশে মোট ১৮৭ বার ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট হয়েছে।
গত বছর ভারতে মোট ৮৪ বার ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কাশ্মীরের ভারতশাসিত অংশে ৪৯ বার ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে।
কাশ্মীরের শাসনভার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিবাদ চলমান। ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ২০১৯ সালের আগস্টে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের বিশেষ অধিকার রদ করে একে কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় নিয়ে আসে। এরপর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার এ অঞ্চলে নিরাপত্তার প্রসঙ্গ তুলে নিয়মিত যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘ্ন সৃষ্টি করে চলেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এসব উদ্যোগের নিন্দা জানানোর পাশাপাশি একে ভিন্নমত দমনের প্রচেষ্টা হিসেবে অভিহিত করেছে।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছে ইউক্রেন। রুশ সামরিক বাহিনী গত বছর দেশটিতে হামলা চালানোর পর অন্তত ২২ বার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
২০২২ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় ১৮ বার সরকারি নির্দেশে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রেখে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ইরান। ১৬ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী কুর্দি নারী মাহসা আমিনি পুলিশি হেফাজতে মারা গেলে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হয়, যা সীমিত আকারে এখনো চলছে।
একই সময়ে মিয়ানমার ৭ বার ও বাংলাদেশ ৬ বার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এই তালিকায় যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে আছে।
অ্যাক্সেস নাউ-এর #কিপইটঅন ক্যাম্পেইন ম্যানেজার ফেলিসিয়া অ্যান্থনিও বলেন, ‘কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা তাদের নিপীড়নের এজেন্ডা পূরণে ইন্টারনেটকে ব্যাহত করেছে।’
২০১৬ সালে ইচ্ছাকৃতভাবে মোট ২৫টি দেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা হয়েছিল। ২০১৭ সালে ১৯টি, ২০১৮ সালে ২৬টি, ২০১৯ সালে ৩৩টি, ২০২০ সালে ২৯টি এবং ২০২১ সালে মোট ৩৪টি দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল।
তবে এক বছরে সর্বোচ্চ সংখ্যকবার ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের ঘটনা ঘটেছে ২০১৯ সালে। সেবছর বিশ্বজুড়ে মোট ২১৩ বার ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের ঘটনা ঘটেছে। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সাল রয়েছে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। সেবছর বিশ্বজুড়ে মোট ১৯৬ বার ব্ল্যাকআউটের ঘটনা ঘটেছিল।