বাংলা ব্যান্ডের নামে এইচএসসি প্রশ্নপত্রের কোড

জাতীয় ডেস্ক

জুলাই ২, ২০২৪, ০১:২৩ পিএম

বাংলা ব্যান্ডের নামে এইচএসসি প্রশ্নপত্রের কোড

ছবি: সংগৃহীত

রোববার (৩০ জুন)  এইচএসসি ও সমমানের বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যার প্রশ্নপত্রের বিভিন্ন সেট দেশের বিভিন্ন ব্যান্ড দলের নামে সাজানো হয়। তবে শুধু বাংলাদেশি ব্যান্ড দিয়েই সাজানো হয়নি প্রশ্নপত্রের সেট! বরং আছে কলকাতার বাংলা ব্যান্ডের নামও! আটটি বোর্ডের প্রশ্নের কোডগুলোর ছবি ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।

সোমবার (১ জুলাই) ব্যান্ড দল অ্যাশেজের সদস্য জুনায়েদ ইভান নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেছেন। তিনি জানান, “দেশীয় ব্যান্ডদলের নামে এবার এইচএসসির বাংলা প্রথমপত্রের প্রশ্নের সেট কোড নির্ধারণ করা হয়েছে।”

ভাইরাল হওয়া ছবিগুলোতে দেখা গেছে এইচএসসির ঢাকা বোর্ডের প্রশ্ন কোড ছিল ক্যাকটাস, রাজশাহী বোর্ডে লালন, চট্টগ্রাম বোর্ডে মাইলস, ময়মনসিংহ বোর্ডে পরশপাথর, কুমিল্লা বোর্ডে পেন্টাগন, বরিশাল বোর্ডে অবসকিউর, যশোর বোর্ডে প্রমিথিউস ও দিনাজপুর বোর্ডের প্রশ্নে মেঘদল ব্যান্ডের নাম!

এছাড়াও বিভিন্ন বোর্ডের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন কোডে ওয়ারফেজ, অ্যাশেস, আভাস ও চিরকুট ব্যান্ডের নাম দেখা গেছে। যা নজরে এসেছে সংশ্লিষ্ট ব্যান্ডগুলোর সদস্যদেরও।

এর মধ্যে মেঘদল ব্যান্ডের দলনেতা ও ভোকাল শিবু কুমার শীল নেট থেকে পাওয়া এসব প্রশ্নপত্র শেয়ার করে লিখেছেন, “২০২৪ এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন‌ কোডে ‘মেঘদল’! বেশ মজা পেলাম ব্যাপারটায়। আরও অনেক ব্যান্ডের নাম ব্যবহৃত হয়েছে প্রশ্নকোডে।”

অ্যাশেজ ব্যান্ডের দলনেতা ও ভোকাল জুনায়েদ ইভান প্রশ্নপত্র শেয়ার করে লিখেছেন, “২০২৪ এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন‌ কোড সাজানো হয়েছে বাংলা ব্যান্ড এর নামকরন দিয়ে। এবার প্রশ্নের সেট সাজানো হয়েছে ‘অ্যাশেজ’ এবং মাইলস, ওয়ারফেজ, চিরকুট, লালন, আভাস, অবসকিউর ব্যান্ড এর নাম দিয়ে। নিশ্চয়ই বাংলা ব্যান্ড এর জন্য এই উদ্যোগ মাইলফলক হয়ে থাকবে।”

এমন ঘটনায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের রক মিউজিক গবেষক গৌতম কে শুভ। এ নিয়ে একটি লেখাও পোস্ট করেন শুভ। তিনি লিখেছেন, “যেই দেশে আগে সরাসরি ব্যান্ডসংগীতকে অপসংস্কৃতি বলা হতো। এখনও মুরুব্বীরা বাঁকা চোখেই দেখেন এই ব্যান্ড মিউজিক কালচারকে। স্বাধীনতার পর গুরু আজম খান যখন পাড়া-মহল্লা কাঁপায়ে টিভিতে সবেঢুকেছে তখন রটিয়ে দেওয়া হলো তিনি নাকি পোলাপানদের নষ্ট বানাচ্ছেন। আশির দশকেও অনেক টিপন্নি শুনতে হয়েছে ব্যান্ডমিউজিককে। আর উত্তাল নব্বইয়েও কম কথা শুনতে হয়নি তথাকথিত সুশীল সমাজের। এখন সেই দেশের এইচএসসি পরীক্ষার মত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের কোডনাম!”

তিনি আরও লিখেছেন, “সবচেয়ে অবাক হয়েছি পশ্চিমবাংলার পরশপাথর, দোহার, ক্যাকটাস, নিওন এর নাম দেখে! যিনি এই নামকরণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন তিনি কলকাতার ‘পরশপাথর’ ব্যান্ডও শুনেছেন। এক সময়ের কলকাতায় মোটামুটি জনপ্রিয় এই ব্যান্ডের গান শুনেছেন এমন লোক তো বাংলাদেশে খুবই কম। আমাদের এই প্রজন্ম তো এই ব্যান্ডটার নামই জানে না এমনকি পশ্চিমবাংলার এই প্রজন্মও। সবচেয়ে ভয়ংকর চমৎকার ব্যাপার ‘নিওন’ নামের একটি কলকাতার ব্যান্ডের নামও লিখেছে। এই ব্যান্ডের কোনও রিলিজড গান নেই যতদূর জানি। লাইভ কনসার্টে ছিলো। এই ব্যান্ডও শুনেছে! কীভাবে! অনুমান করছি বোর্ডের প্রশ্নপত্রের নামকরণ করা লোকটি নব্বই দশকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছিলেন, ছিলেন বাংলা ব্যান্ডের ফ্যান। এখনও যিনি ব্যান্ড শোনেন।”

Link copied!