সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন তুঙ্গে উঠেছে। আন্দোলনের এই পর্যায়ে ঘটেছে প্রাণহানির ঘটনা। বন্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সড়ক অবরোধে স্থবির হয়ে পড়ছে জনজীবন। থমথমে পরিস্থিতি চারপাশে।
অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সঙ্গে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির সব আবাসিক শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও পুলিশ দফায় দফায় সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনায় দেশে একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেওয়া শুরু হয়।
সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, চলমান আন্দোলন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। এদিকে হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের বক্তব্য, “এই ঘোষণা আমরা মেনে নেবো না। দেশে কোনও ‘মহাদুর্যোগ’ চলছে না যে হল বন্ধ করতে হবে।”
কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, “আন্দোলনকে স্তিমিত করার জন্যই হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। কিছুতেই হল ছাড়বো না। তবে সরকার দাবি মেনে নিলে আমরা আর রাজপথে থাকবো না। ছাত্রসমাজ যৌক্তিক দাবির জন্য লড়ছে।”
এদিকে আওয়ামী লীগের অস্তিত্বের ওপর হুমকি এসেছে জানিয়ে দলের নেতাকর্মীদের ঢাকাসহ সারা দেশে শক্ত অবস্থান নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নেতাকর্মীদের যেকোনও ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার নির্দেশও দেন তিনি।
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে ছয়জন নিহতের ঘটনাসহ কয়েক শ’ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে চলেছে পুলিশের গুলি। এতে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শেষবারের মতো সন্তানের মুখ দেখার জন্য মা মনোয়ারা বেগমকে ডাকা হলে আহাজারিতে ভেঙে পড়েন তিনি।একই সঙ্গে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘর্ষে নিহতদের জন্য গায়েবানা জানাজা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।