তিন লাখে প্রক্সির চুক্তি, মেধা তালিকায় দশম হলেও ভর্তির সময় আটক

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২, ০৩:১৭ এএম

তিন লাখে প্রক্সির চুক্তি, মেধা তালিকায় দশম হলেও ভর্তির সময় আটক

ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হতে আসা দশম  স্থান অর্জনকারী  এক ছাত্রকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আটককৃত শিক্ষার্থীর নাম মো. মিনহাজুল আবেদীন আল-আমীন। মঙ্গলবার (০৬ সেপ্টেম্বর) আইন বিভাগে ভর্তি হতে  আসলে  তাকে  আটক করা হয়।

অভিযুক্ত মিনহাজুল আবেদীন  ময়মনসিংহের  ফুলবাড়িয়া পৌরসভার গৌরিপুর এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে। ময়মনসিংহ সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ফুলবাড়িয়ার আল হেরা একাডেমি থেকে এসএসসি পাশ করে সে।  ভর্তি পরীক্ষায় তিন লাখ টাকার বিনিময়ে প্রক্সি পরীক্ষার মাধ্যমে   বি ইউনিটে (সমাজবিজ্ঞান ও আইন অনুষদ) দশম  স্থান অর্জন করে। তার ভর্তি পরীক্ষার রোল-২১৩৭২৯০।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রক্সি দেওয়ার বিষয়টি শিকার করে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী। ভর্তি পরীক্ষায় সময় তার স্থলে অন্য একজন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। তিন লাখ টাকা চুক্তির বিনিময়ে তার পরীক্ষা অন্য আরেকজন দিয়ে দিয়েছে বলে জানায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদে সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে বলে আমারা জানতে পারি।  আমরা সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখি অভিযুক্তের  পরীক্ষার উত্তরপত্রের সাথে হাতের লেখা কোন ভাবেই মিলছে না। আইন অনুষদের ডীনের  নির্দেশে আমরা তাকে নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে এসে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করি।  কিন্তু অভিযুক্ত পরীক্ষার্থী বরাবরই অস্বীকার করে।  তখন আমরা তার মোবাইল ফোন তল্লাশি করতে গিয়ে প্রক্সি দেওয়ার বিষয়ে  সত্যতা পাই।  তার হোয়াটসঅ্যাপে পাওয়া  বিভিন্ন ছবি এবং প্রক্সি দেওয়া ব্যক্তির সাথে কথপোকথন এর মাধ্যমে আমরা বিষয়টি নিশ্চিত হই।  প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে সে তার মামার মাধ্যমে  ৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চুক্তি করেছে। 

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত পরীক্ষা আইনের মাধ্যমে মামলা সহকারে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করবো। 

আইন অনুষদের ডিন তাপস কুমার দাস  বলেন, ‘বিভাগে ভর্তি হতে আসলে চেয়ারম্যান এর সিগনেচার নিতে হয়। সেসময় আমরা দ্বিতীয়বার সকলের হাতের লেখা যাচাই করি। এসময়ে ওর হাতের লেখা অমিল পাওয়াতে তাকে সন্দেহ হয়।পরবর্তীতে আমরা তাকে নিরাপত্তা শাখায় হস্তান্তর করি।

প্রক্সি পরীক্ষা সহ ভর্তি পরীক্ষায় যাবতীয় প্রতারণা  বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে  আরও সচেতন হওয়া জরুরী কি না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়  ভর্তি পরীক্ষায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করতে পারে, তবে তা খুবই ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার ।  এছাড়াও মৌখিক সাক্ষাতকারের সময়  হ্যান্ডরাইটিং এক্সপার্ট এর ব্যবস্থা করলেও এই প্রতারণা এড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

Link copied!