দেশের শ্রেষ্ঠ চিকিৎসা বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৭৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। ১০ জুলাই ৭৬ তম ডিএমসি দিবস। এ ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি গর্বিত। ১০ জুলাই আমাদের আনন্দের দিন। উৎসবের দিন। কৃতজ্ঞতা জানাবার দিন। ঋণ স্বীকার করবার দিন। শ্রদ্ধায় স্মরণ করবার দিন। স্মৃতি রোমন্থনের দিন।
দেশের শ্রেষ্ঠ চিকিৎসা বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ৭৫ বছর পূর্ণ করলো— এ এক অপার আনন্দ।
আজ তাই এ বৈশ্বিক অতিমারির তাণ্ডবের মধ্যেও উৎসবের দিন।
কৃতজ্ঞতা জানাই শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যারা এ বিদ্যাপীঠে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারীসহ অন্যান্য নানা ভুমিকায় ছিলেন তাদের সবার প্রতি। যাদের পদচারণায় মুখরিত ছিলো গত ৭৫টি বছর। যে শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দের কাছে শিখবার সুযোগ পেয়েছি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। অগ্রজ, অনুজ, সহপাঠী সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা, তাদের কাছ থেকেও শিখেছি অনেক অনেক কিছু। তাদেরকে পাশে পেয়েছি, পাশে পাই এখনো।
এ বিদ্যাপীঠের প্রায় সবার কাছেই পেয়েছি অশেষ স্নেহ, ভালোবাসা। এখনো পাই। এ ভালোবাসা আমার চলার পথে শক্তি আর অনুপ্রেরণা যোগায় প্রতিনিয়ত। এখানে পড়বার সময়ই রাজনীতি আর স্বেচ্ছাসেবায় নিজেকে সরাসরি যুক্ত করার সুযোগ পেয়েছি। তাই আজ আমার ঋণস্বীকার করবার দিন।
শ্রদ্ধায় স্মরণ করি এ বিদ্যাপীঠের যাঁরা আমাদের সকল আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন, সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন, আমাদের পেশাকে আরও মহিমান্বিত করেছেন তাঁদের।
আজ স্মৃতি রোমন্থনের দিন। কলেজের প্রতিটি ক্লাসরুম, লেকচার অডিটোরিয়াম, ল্যাব, ক্যান্টিন, কমনরুম, মাঠ, হল, হাসপাতাল প্রতিটি জায়গায় ছড়িয়ে আছে অসংখ্য স্মৃতি। প্রায় সকল স্মৃতিই আনন্দের, সুখময়। তারপরও আছে কিছু স্মৃতি, যে স্মৃতিগুলো বেদনার, কষ্টের। জীবনের খুব সুন্দর আর গুরুত্বপূর্ণ সময়ের বড় অংশটাই কাটিয়েছি এ বিদ্যাপীঠে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ আমাদের শুধু এর শিক্ষক, শিক্ষার্থীদেরকেই নয়, দেশের মানুষকে নিরন্তর সেবা দিয়ে যাচ্ছে নিরন্তর। চিকিৎসা সেবায় এক অনন্য ভুমিকা রেখে চলেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। শুধু দেশের সর্বত্রই নয়, বিশ্বব্যাপী চিকিৎসা সেবায়, গবেষণায় অনন্য ভুমিকা রেখে চলেছে এ বিদ্যাপীঠের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, শিক্ষকেরা। সমাজসেবায়, রাজনীতিতে, সংস্কৃতিতে, প্রশাসনে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে— সর্বত্র আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন তারা।
আমাদের সবারই জীবনে যত অর্জন, যত সাফল্য, তা' ছাপিয়ে যে পরিচয় আমাদের প্রাণের সবচে' কাছাকাছি তা' হলো আমাদের পরিচয় আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
ডিএমসির প্রতি নিঃশর্ত ভালোবাসা, আজ এবং প্রতিদিন, চিরদিন। জয় হোক ডিএমসির।
লেখক: শিক্ষামন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।