ডার্ক ওয়েব: গোপন ইন্টারনেট দুনিয়া যার ৯৬% অন্ধকারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ৭, ২০২৩, ১১:১১ পিএম

ডার্ক ওয়েব: গোপন ইন্টারনেট দুনিয়া যার ৯৬% অন্ধকারে

Dark web বা Dark Net, ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কিন্তু এই শব্দটি একবার হলেও শুনেননি, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। বর্তমানে আমরা প্রায় প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজই ইন্টারনেটে করে থাকি। “তথ্য সংগ্রহ” থেকে শুরু করে “অনলাইন শপিং”, “হোটেল বুকিং”, “ভিডিও কল”, “রিচার্জ”, এমনকি “টাকা ট্রান্সফার” বা “ব্যাংকিং”।

কোনো কারণে ইন্টারনেট চলে গেলে যে অবস্থা হয়, তাতে বোঝা যায় আমরা কী পরিমাণে নির্ভর হয়ে থাকি এই ইন্টারনেটের উপর। তবে, জানেন কি আমরা সাধারণ ইন্টারনেট এর যতটুকুই পরিমাণ ব্যবহার করছি, সেটা সারা ইন্টারনেট দুনিয়ার কেবলই ৪ শতাংশ। 

কি অবাক হচ্ছেন?

আমরা সাধারণভাবে যে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি, এটাকে বলা হয় “surface web”.

Google, Yahoo, Bing বা অন্যান্য search engine যাই হোক না কেন তার সবটাই এই ৪% এর মধ্যেই। এর বাইরে, সম্পূর্ণ ওয়েব এর যেই ৯৬% ভাগ রয়েছে সেটা রয়ে যায় অন্ধকারে, অর্থাৎ ডার্ক ওয়েব।

Dark web কী?

Dark web-এর ওয়েবসাইটগুলোর IP address-গুলো জেনেবুঝে লুকিয়ে রাখা হয়। এ কারণে এ ধরণের ওয়েবসাইটগুলো সাধারণত search engine দ্বারা এক্সেস করা যায় না।

ওয়েবসাইটগুলোকে এক্সেস করার ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ software, configurations বা authorization-এর প্রয়োজন পড়ে।

এই ডার্ক ওয়েবে ব্যবহারকারীরা নিজের পরিচয় লুকিয়ে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে।

আর এই কারণেই নানান অবৈধ কাজগুলো করতে ডার্ক ওয়েবকে ব্যবহার করা হয়।

ডার্ক ওয়েবের মধ্যে প্রবেশ করাটা কিন্তু খুব একটা কঠিন না। ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করাতে আপনার এমন একটি বিশেষ ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহার করতে হয়। এমনি একটি web browser এর নাম হলো “Tor browser”.

এটি সাধারণ web browser-এর মতোই এটা কাজ করে। তবে ডার্ক ওয়েবে নিজের প্রয়োজনীয় তথ্য বা websiteগুলো খুঁজে বের করাটা অনেক কঠিন।

কারণ, সাধারণ ওয়েব (surface web) এর সার্চ ইঞ্জিনগুলোর মতো ডার্ক ওয়েবের মধ্যে ওয়েবসাইটগুলোর কোনো ব্যবস্থা নেই।

এবার আসি Dark web কীভাবে কাজ করে?

ডার্ক ওয়েবসাইটগুলোর domain extension কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা। সাধারণ ওয়েবসাইটগুলোর ডোমেইন এক্সটেনশনগুলো হলো, “com”, “net”, “org”, “info”, “in” ইত্যাদি। ডার্ক ওয়েবসাইটগুলোর এক্সটেনশন হলো “.onion“.

“.Onion” হলো highly encrypted domain name. এই এক্সটেনশন ব্যবহার করার ফলেই সাধারণ ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন গুলো এই সাইটগুলোকে খুঁজে পায় না।

আসলে এখানে সম্পূর্ণ খেলাটি হলো Tor browser এর। এটা এমন এক আধুনিক এবং উন্নত ওয়েব ব্রাউজার যা নিজের Tor Network-এর মাধ্যমে অনলাইনে আপনার পরিচয় লুকিয়ে রাখে।

ডার্ক ওয়েব এর সাথে জড়িত ওয়েবসাইট / ডার্ক সাইটগুলোতে যাওয়ার চিন্তাও মনে আনবেন না।

কেননা, এই ওয়েবের মধ্যে মূলত অনেক অবৈধ (illegal) ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলোতে যদি আপনি ভুলেও প্রবেশ করেন, তাহলেও হয়তো সমস্যায় পড়তে পারেন।

তবে এই ৯৬% পুরোটাই কিন্তু ডার্ক ওয়েব না। এই ২ অংশের মাঝে আর এক রকম ওয়েব আছে যেটাকে বলা হয় ডিপ ওয়েব (deep web).এটাকে অনেক সময় invisible web বা hidden web বলেও বলা হয়।

মুলত Word wide web (WWW) এর সেই প্রত্যেক কনটেন্ট বা অংশ যেগুলো যেগুলো সাধারণ সার্চ ইঞ্জিন গুলোর দ্বারা ইনডেক্স করা হয় না বা করা যায় না সেগুলো এই ওয়েবের অংশ।

ধরুন আপনি নিজের জিমেইল একাউন্টে লগইন করতে চাইছেন। Gmail লিখে গুগলে সার্চ করলে জিমেইল এর লগইন ওয়েবসাইট পেজ আসবে। কিন্তু, জিমেইল এর মধ্যে নিজের লগইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করার পর, কেবল email dashboard/ inbox/ content দেখতে পারবেন।

জিমেইলের এই অংশ কিন্তু সার্চ ইঞ্জিনের মধ্যে দেখা যায় না। ঠিক এটাকেই বলা হয় deep web। যেখানে ওয়েবসাইটের বা ওয়েবের কিছু অংশ লুকানো থাকে এবং যা এক্সেস করা সম্ভব কেবলেই নিদিষ্ট ব্যাহবারকারীর অনুমতি সাপেক্ষে। আপনার online banking accounts এর web page ও কিন্তু এই ডিপ ওয়েবের আরেকটি উদাহরণ ।

Link copied!